৪ ‘অলিম্পিক গোল’র মালিক মামুনুল
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ
- ২৭ জুলাই ২০১৯, ১৫:১৬
স্ট্রাইকারদের গোল উৎসবে মিডফিল্ডার বা ডিফেন্ডারদের করা গোল কিছুটা আড়ালেই থেকে যায়। হ্যাটট্রিক বা অসাধারণ কিছু গোল হলেই তা আসে আলোচনায়। যেমন এবারের এএফসি কাপে ঢাকা আবাহনীর মামুনুল ইসলাম মামুনের দু’টি গোল পেয়েছে স্পট লাইট। এর মধ্যে নেপালের মানাং মার্সিয়ান্দির বিপক্ষে করা তার গোল নির্বাচিত হয়েছে এএফসির সপ্তাহের সেরা গোল হিসেবে।
পজিশনের দিক থেকে মিডফিল্ডার মামুনুল। খেলায় আক্রমণ রচনা করা ও স্ট্রাইকারদের দিয়ে গোল করানো। এর পরও এ পর্যন্ত তার করা গোলের সংখ্যা ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক আসর মিলে ৫০টি মতো। এটা তারই দেয়া তথ্য। লক্ষণীয় বিষয় তার এসব গোলই অসাধারণ। সবগুলোই বক্সের বাইরে থেকে নেয়া দুর্দন্ত শটে। হেডে আজ পর্যন্ত কোনো গোল করা হয়নি বর্তমানে ঢাকা আবাহনীতে খেলা এই ফুটবলারের।
একটি ছাড়া তার সব গোলই বাম পায়ে। যে গোলটি তার ডান পায়ে তা করেছেন এবারের এএফসি কাপে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ভারতীয় ক্লাব চেন্নাইয়ান এফসির বিপক্ষে। তার এই গোলেই ৩-২ এ জয় নিশ্চিত হয় আবাহনীর। মামুন জানালেন, এই গোলটিই আমার সেরা।
দূর পাল্লার শট, কর্নার এবং ফ্রি কিকেই গোল করে যাচ্ছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। এর মধ্যে তার অলিম্পিক গোল চারটি। কারো সহযোগিতা ছাড়া সরাসরি কর্নার কিকে গোল করাকে বলা হয় অলিম্পিক গোল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দু’টি হ্যাটট্রিকেরও মালিক চট্টগ্রামের এই সন্তান।
এসব গোলই তার দর্শনীয় শট বা ভলিতে। হ্যাটট্রিক দু’টি করেছেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের জার্সি গায়ে কক্সসিটির বিপক্ষে ফেডারেশন কাপে এবং লে. শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে ফরাশগঞ্জের বিপক্ষে। তা ২০১১ ও ২০১৫ সালে। আর এবার যে তিনটি গোল করেছেন তিনটিই অতি অসাধারণ। চেন্নাইয়ানের বিপক্ষে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে গোল। মানাং মার্সিয়ান্দির বিপক্ষে বাম পায়ের তীব্র শটে গোল। সর্বশেষ টিভিএস বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ২০ জুলাই সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে কর্নার কিক থেকে নেয়া সরাসরি শটে। সতীর্থদের দিয়ে ক্রস, ফ্রি কিক এবং কর্নারে তার করানো গোলের সংখ্যা অসংখ্য।
২০০৫ সালে বিকেএসপি থেকে ব্রাদার্সে যোগ দেন মামুনুল। ২০০২ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দল, ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-২০ এবং ২০০৬ সালে অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলে খেলেছেন। সিনিয়র জাতীয় দলে তার অভিষেক ২০০৭ সালে। তার প্রথম অলিম্পিক গোল জাতীয় দলের হয়ে ২০০৮ এর কলম্বো, মালে সাফ ফুটবলে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তার নেয়া কর্নার কিক সরাসরি চলে যায় জালে। সে ম্যাচে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ দল শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ড্র করে।
এই ফুটবলারের পরের তিন অলিম্পিক গোল যথাক্রমে চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে, শেখ রাসেলের জার্সি গায়ে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে এবং ঢাকা আবাহনীর পক্ষে সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে।
মামুনুলের গোলে ম্যাচ জয়ের একাধিক ঘটনা। ২০১৪ সালের ইনচন এশিয়ান গেমসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তার গোলেই বাংলাদেশের ১-০ গোলে জয়। ২০০৯ সালে পেশাদার লিগে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে মোহামেডানের ২-১ গোলে জয়ের উইনিং গোলটি তারই। ২০১২ সালের সুপার কাপে ঢাকা আবাহনীর বিপক্ষে শেখ রাসেলেকে জিতিয়েছিলেনও তিনি। তার অলিম্পিক গোলেই সে দিন শেষ হাসি রাসেল সমর্থকদের।
মামুনুলের আন্তর্জাতিক গোলের সংখ্যা আটটি। এর মধ্যে জাতীয় দলের হয়ে করেছেন চারটি গোল। ঢাকা আবাহনী ও শেখ জামালের জার্সি গায়ে করেছেন দু’টি করে গোল। মামুন তার সেট পিসে গোলের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন কোচ মারুফুল হকের কাছে। জানান, ‘মারুফ ভাই আমাকে ডেথ বলে গোল করার জন্য প্রচুর অনুশীলন করিয়েছেন।’
মামুনের এই গোল করার দক্ষতরা প্রশংসা স্ট্রাইকার জাহিদ হাসান এমিলির মুখেও। এমিলির মতে, এ জন্যই মামুন দেশের সেরা মিডফিল্ডার। ভালো খেলা, গোল করা, গোল করানো সব কাজেই দক্ষ তিনি।
এবার মামুনের ঘুরে দাঁড়ানের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে আবাহনীর ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার ওয়েলিংটনের ইনজুরি। তার ইনজুরির ফলে চেন্নাইয়ানের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পান মামুনুল। সে ম্যাচে চমৎকার খেলে করেন জয়সূচক গোল। সে পারফরম্যান্সই জাতীয় দলের কোচ জেমি ডে কে বাধ্য করে মামুনুলকে ফের জাতীয় দলে ডাকতে। এর পরই তার আরো দুই দৃষ্টিনন্দন গোল।
মোট গোল : ৫০টির মতো
অলিম্পিক গোল : চারটি
হ্যাটট্রিক : দুটি
আন্তর্জাতিক গোল : আটটি (জাতীয় দলে চারটি, ক্লাব ফুটবলে দু’টি করে)
স্মরণীয় গোল: ২০১৯ এর এএফসি কাপে চেন্নাইয়ানেরর বিপক্ষে
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা