২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঢাবির বাসে হামলার প্রতিবাদে ডাকসুর মানববন্ধন

ঢাবির বাসে হামলার প্রতিবাদ ডাকসুর - ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঈশা খাঁ ও ক্ষণিকা বাসে হামলার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে তারা এই মানববন্ধন করে।

মানববন্ধনে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আন্দোলন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমরা ছাত্ররা যখন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করেছি আমরা তো কখনো বাসের কাঁচ ভাঙ্গিনি, মানুষের মুখে মবিল বা কালি মেখে দেইনি। শ্রমিকদের যদি স্বার্থে আঘাত লাগে তারা আন্দোলন করতে পারে কিন্তু সেখানে কেন সাধারণ মানুষের মুখে কালি মেখে দিতে হবে। কেন গাড়িতে কালি মেখে দিতে হবে। কেন গাড়ির উপর ভাঙচুর করতে হবে। এটি কোনো আন্দোলন নয়, এটি একটি নৈরাজ্য ও উস্কানিমূলক আন্দোলন। আমরা জানি, এ পরিবহন সেক্টরকে কারা উস্কিয়ে দেয়। অনেকে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য, সরকারকে একটি মেসেজ দেয়ার জন্য তারা এ শ্রমিকদের রাস্তায় নামায়। সরকার যেন তাদের স্বার্থ রক্ষা করে।

তিনি বলেন, রাস্তাঘাটে যেসব যানবাহন চলে তার ফিফটি পার্সেন্ট ফিটনেসবিহীন। ফোরটি পার্সেন্ট লাইসেন্সবিহীন। এ কারণে নতুন আইনে তারা যখন বুঝতেছে যে, তাদের ব্যবসায় লস হবে তখন তারা এ আন্দোলনের সৃষ্টি করেছে। তারা একটি হুজুগের উপরে আন্দোলন করছে। আন্দোলনের নামে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা করেছে। এটি একটি নৈরাজ্য। সেখানে আমরা ভিডিওতে দেখেছি, একজন পুলিশ সেখানে ভিডিও করছে। তিনি সেখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন অথচ তার দায়িত্ব ছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রক্ষা করা। তাই আমরা পরিবহন সম্পাদককে বলবো, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মামলা না করে, তিনি যেন ছাত্রদের পক্ষে বাদী হয়ে মামলা করেন। আর এ ধরনের ঘটনা আর যেন কখনো না ঘটতে পারে। আর যেন কেউ এরকম দুঃসাহস না দেখাতে পারে।

পরিবহন সম্পাদক শামস-ই নোমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের উপর হামলা করা মানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যের উপর হামলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ হাজার শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা। আমরা এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং যারা এই হামলা যারা ঘটিয়েছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, এ হামলায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ অতিশিগগিরই গ্রহণ করুন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকার সময় উপযোগী যথাযথ একটি আইন প্রণয়ন করেছেন। আমরা এ আইনকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতিকারী যারা নিজেদের স্বার্থের বাইরে কখনো চিন্তা করতে পারে না তারা ধর্মঘট ডেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা করে কলঙ্কজনক একটি বিষয় ঘটিয়েছে। আমরা সরকারের কাছে তাদের জোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

সদস্য তিলোত্তমা শিকদার বলেন, আমরা আপনাদের কথা দিয়েছিলাম আপনাদের সুখে-দুঃখে প্রয়োজনে আপনাদের পাশে থাকব। আজকে আমাদের যে বিষয়ের উপর ভিত্তি করে আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি আমাদের সে বিষয়ে একত্রিত হওয়ার কথা ছিল না। আজকে আমরা দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে এখানে একত্রিত হয়েছি। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

তিনি আরো বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, বাসে হামলা মানে বাংলাদেশের সৃষ্টির পিছনে হামলা। আজকে আমরা আমাদের শান্তিপ্রিয় মানববন্ধনের মাধ্যমে ওই সকল শ্রমিকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই এ ধরনের ঘটনার স্পর্ধা আর কখনো যেন না হয়। এই ঘটনার ন্যায়বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের দাবি অব্যাহত রাখব। যদি আমরা এই ন্যায়বিচার না পাই আমরা রাজপথে নামবো। আমরা আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে কোনো দাগ লাগতে দিব না।

এদিকে, মানববন্ধনের পর ডাকসু নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের সাথে সাক্ষাৎ করে হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুতবিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হামলায় সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভিসি আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি গতকালকে বলেছি আজকেও বলছি, যারা এই হামলার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আমরা যেখানে ঘটনা ঘটেছে ওই থানায় মামলা করব।’

বুধবার সকালে যাত্রীবাহী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঈশা খাঁ ও ক্ষণিকা বাস আসার সময়ে টঙ্গীতে ক্ষণিকা বাস ও সাইনবোর্ডে ঈশা খাঁ বাসে হামলা করে শ্রমিকরা। এ সময় শ্রমিকরা ঈশা খাঁ ও ক্ষণিকা বাসে ভাঙচুর করে করে এবং ঈশা খাঁ বাসের ড্রাইভারকে বাস থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করে।


আরো সংবাদ



premium cement