২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ শাবান ১৪৪৬
`

মতের অমিল মানেই ‘ছাত্রশিবির ট্যাগ’

মতের অমিল মানেই ‘ছাত্রশিবির ট্যাগ’ - ছবি : সংগৃহীত

দেশ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মেধা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তারপরও আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় সেখানকার নিয়ম কানুন ও শিক্ষার্থীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পথে নেমে কি নৈতিকতা বাদ দিয়েছেন তারা? এই প্রশ্নও উঠেছে।

জানাযায়, বুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো আচরণ বা প্রকাশিত মত ক্ষমতাধরদের মনের মতো না হলেই ভয়ানক সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে বলে জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, এসব ক্ষেত্রে বড়রা ছোটদের কান বরাবর চড় মেরে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়ে থাকেন। আর যাদের অপরাধ ‘গুরুতর’ বলে ধার্য হয়, তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন ও জখম করা হয়। তবে এসব সাজা ধার্য হওয়ার আগে ওই শিক্ষার্থীকে ‘ছাত্রশিবির’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। বুয়েটের শিক্ষার্থীদের ভাষায় ছাত্রশিবিরের ‘ট্যাগ’ লাগানো হয়। একই সাথে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের মোবাইল, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ দামি জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের তথ্যমতে, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দাঈয়ান নাফিস প্রধান আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তখন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী পুলিশ নিয়ে শেরেবাংলা হলে গিয়েছিলেন। গিয়েই দাঈয়ানকে ‘শিবির’ বলে ঘোষণা দেন এবং শারীরিকভাবে নাজেহাল করেন। লাঞ্ছিত করার সেই দৃশ্য গোলাম রাব্বানী ভিডিওতে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করেছিলেন। দাঈয়ানের মেকানিক্যাল যন্ত্রপাতির বক্সকে মোবাইল ফোনের ‘সিমবক্স’ বলে প্রচার করে বলেছিলেন, ছাত্রটি অসংখ্য সিম ব্যবহার করে নাশকতামূলক তৎপরতায় লিপ্ত ছিল। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, দাঈয়ানের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, আবরার হত্যাকাণ্ডের দুদিন আগে ৪ অক্টোবর কম্পিউটার সায়েন্সের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এহতেশামুল আজিমকে ‘শিবির’ আখ্যায়িত করে শেরেবাংলা হল থেকে বের করে দেয়া হয়। একই সাথে তার মোবাইল ও ডেস্কটপ কম্পিউটার ছিনিয়ে নেয়া হয়। কী কারণে ওই শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়া হয়েছিল, তা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখনো জানেন না। জানার সাহসও দেখাননি। আবরার হত্যার পর এই মামলার আসামি শামীম বিল্লাহর কক্ষে দাঈয়ানের কম্পিউটার পাওয়া যায়।

বড় মানেই ছোটদের মারার অধিকার
বুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, বুয়েটে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন আসতে-যেতে সামনে যাকে দেখবেন, তাকেই সালাম দিতে হয়, হোক তিনি জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী অথবা পিয়ন-আরদালি। এ ছাড়া ক্যাফে ও বাউন্ডারি দেয়ালে আয়েশি ভঙ্গিতে বসা যাবে না। বড়দের সামনে চেয়ারে বসা যাবে না। মিছিলে যেতে হবে। এসবের ব্যত্যয় ঘটলে ‘বড় ভাইদের’ হাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে জ্যেষ্ঠদের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা এমন, ‘তোদের মার খেতে হবে, এরপর তোরা বড় হয়ে ছোটদের মারবি। না মারলে ছোটদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবি না।’

সব হলেই যেকোনো ধরনের অনিয়মের বিষয়ে প্রভোস্টের কাছে বেনামে অভিযোগ করার সুযোগ আছে। কিন্তু কেউ একজন অভিযোগ করলে সবার ওপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। যে কারণে কেউই অভিযোগ করেন না। কয়েক মাস আগে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে জ্যেষ্ঠ ছাত্ররা প্রথম বর্ষের বেশ কয়েকজন ছাত্রকে সম্মেলন কক্ষে ডেকে নিয়ে শাস্তি দিচ্ছিলেন। এমন সময় প্রভোস্ট সেখানে হাজির হন। তিনি ছোটদের কাছে জানতে চান, তোমাদের শাস্তি দিচ্ছে নাকি? জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘না স্যার। আমরা রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছি।’ শিক্ষার্থীরা জানান, সব হলেই র‍্যাগিং প্রতিরোধে কমিটি আছে। তবে সেসব কমিটিতে নির্যাতনকারীদের সংখ্যাই বেশি।


আরো সংবাদ



premium cement
কমলগঞ্জে সেন্ডেল ও ভাঙা প্যাডেলের সূত্র ধরে ঘাতকদের আটক করলো পুলিশ কুমিল্লা আদালতে বাদীকে পিটিয়ে আহত করল আসামিরা রাজবাড়ী জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি আবদুল জব্বার গ্রেফতার ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯২ কোটি ডলার গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দিন : নজরুল ইসলাম খান ইউক্রেনে দখল করা ভূমি কখনোই ‌‘বিক্রি’ করা হবে না : ক্রেমলিন রমজানে নতুন কর্মঘণ্টা ঘোষণা আমিরাতের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার দাবি মোহাম্মদ সেলিমের রংপুরে রাখাল রাহার গ্রেফতার ও র‌্যাব কর্মকর্তা আলেপের বিচারের দাবিতে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ বাঁধ নির্মাণে ভারতের বাধার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ঢাকায় উল্টো পথে যান চলাচল প্রসঙ্গে গণবিজ্ঞপ্তি

সকল