২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মতের অমিল মানেই ‘ছাত্রশিবির ট্যাগ’

মতের অমিল মানেই ‘ছাত্রশিবির ট্যাগ’ - ছবি : সংগৃহীত

দেশ সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মেধা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। তারপরও আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় সেখানকার নিয়ম কানুন ও শিক্ষার্থীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পথে নেমে কি নৈতিকতা বাদ দিয়েছেন তারা? এই প্রশ্নও উঠেছে।

জানাযায়, বুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো আচরণ বা প্রকাশিত মত ক্ষমতাধরদের মনের মতো না হলেই ভয়ানক সব ঘটনা ঘটতে শুরু করে বলে জানান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, এসব ক্ষেত্রে বড়রা ছোটদের কান বরাবর চড় মেরে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পেয়ে থাকেন। আর যাদের অপরাধ ‘গুরুতর’ বলে ধার্য হয়, তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন ও জখম করা হয়। তবে এসব সাজা ধার্য হওয়ার আগে ওই শিক্ষার্থীকে ‘ছাত্রশিবির’ বলে আখ্যায়িত করা হয়। বুয়েটের শিক্ষার্থীদের ভাষায় ছাত্রশিবিরের ‘ট্যাগ’ লাগানো হয়। একই সাথে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের মোবাইল, ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ দামি জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের তথ্যমতে, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দাঈয়ান নাফিস প্রধান আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তখন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী পুলিশ নিয়ে শেরেবাংলা হলে গিয়েছিলেন। গিয়েই দাঈয়ানকে ‘শিবির’ বলে ঘোষণা দেন এবং শারীরিকভাবে নাজেহাল করেন। লাঞ্ছিত করার সেই দৃশ্য গোলাম রাব্বানী ভিডিওতে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করেছিলেন। দাঈয়ানের মেকানিক্যাল যন্ত্রপাতির বক্সকে মোবাইল ফোনের ‘সিমবক্স’ বলে প্রচার করে বলেছিলেন, ছাত্রটি অসংখ্য সিম ব্যবহার করে নাশকতামূলক তৎপরতায় লিপ্ত ছিল। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি, দাঈয়ানের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, আবরার হত্যাকাণ্ডের দুদিন আগে ৪ অক্টোবর কম্পিউটার সায়েন্সের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এহতেশামুল আজিমকে ‘শিবির’ আখ্যায়িত করে শেরেবাংলা হল থেকে বের করে দেয়া হয়। একই সাথে তার মোবাইল ও ডেস্কটপ কম্পিউটার ছিনিয়ে নেয়া হয়। কী কারণে ওই শিক্ষার্থীকে বের করে দেয়া হয়েছিল, তা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখনো জানেন না। জানার সাহসও দেখাননি। আবরার হত্যার পর এই মামলার আসামি শামীম বিল্লাহর কক্ষে দাঈয়ানের কম্পিউটার পাওয়া যায়।

বড় মানেই ছোটদের মারার অধিকার
বুয়েট শিক্ষার্থীরা জানান, বুয়েটে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। যেমন আসতে-যেতে সামনে যাকে দেখবেন, তাকেই সালাম দিতে হয়, হোক তিনি জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী অথবা পিয়ন-আরদালি। এ ছাড়া ক্যাফে ও বাউন্ডারি দেয়ালে আয়েশি ভঙ্গিতে বসা যাবে না। বড়দের সামনে চেয়ারে বসা যাবে না। মিছিলে যেতে হবে। এসবের ব্যত্যয় ঘটলে ‘বড় ভাইদের’ হাতে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত হতে হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে জ্যেষ্ঠদের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা এমন, ‘তোদের মার খেতে হবে, এরপর তোরা বড় হয়ে ছোটদের মারবি। না মারলে ছোটদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবি না।’

সব হলেই যেকোনো ধরনের অনিয়মের বিষয়ে প্রভোস্টের কাছে বেনামে অভিযোগ করার সুযোগ আছে। কিন্তু কেউ একজন অভিযোগ করলে সবার ওপর নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। যে কারণে কেউই অভিযোগ করেন না। কয়েক মাস আগে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে জ্যেষ্ঠ ছাত্ররা প্রথম বর্ষের বেশ কয়েকজন ছাত্রকে সম্মেলন কক্ষে ডেকে নিয়ে শাস্তি দিচ্ছিলেন। এমন সময় প্রভোস্ট সেখানে হাজির হন। তিনি ছোটদের কাছে জানতে চান, তোমাদের শাস্তি দিচ্ছে নাকি? জবাবে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘না স্যার। আমরা রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করছি।’ শিক্ষার্থীরা জানান, সব হলেই র‍্যাগিং প্রতিরোধে কমিটি আছে। তবে সেসব কমিটিতে নির্যাতনকারীদের সংখ্যাই বেশি।


আরো সংবাদ



premium cement
দৌলতদিয়ায় ৫২ হাজারে পদ্মার বোয়াল বিক্রি দেশের মেরিন অ্যাকাডেমিগুলোকে আন্তর্জাতিক মানের করা হবে : নৌ-পরিবহন উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের চেতনার আলোকে বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে : অধ্যাপক মুজিবুর সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের নামে মামলা ইমরান খান ও বুশরার বিরুদ্ধে আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় রায় স্থগিত এখন পর্যন্ত পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের আয়োজনের জন্য কোন বাস্তব তাগিদ নেই : ক্রেমলিনের মুখপাত্র চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা গতবারের চেয়ে বেশি হবে : টি বোর্ড চেয়ারম্যান ইয়েমেনের হাউছিদের বিরুদ্ধে ‘শক্তি, প্রত্যয়’ নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি নেতানিয়াহুর স্ত্রী-মেয়েসহ সোলায়মান জোয়ার্দারের ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পেছনে মাস্কের নেপথ্য শক্তি হওয়াকে অস্বীকার ট্রাম্পের স্ত্রী-সন্তানসহ শাহরিয়ার আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সকল