জাবিতে ছিনতাইকারী সেই ৫ ছাত্রলীগ কর্মী বহিষ্কার
- জাবি সংবাদদাতা
- ০১ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:২৭, আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯, ১৭:৩৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর মেয়ের জামাইকে মারধর, ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ জাবি শাখা ছাত্রলীগের ৫ কর্মীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রোববার বিকেলে বিশ্বদ্যিালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সাময়িক বহিষ্কৃতরা হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সঞ্জয় ঘোষ, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের আল রাজি, ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের রায়হান পাটোয়ারী, দর্শন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের মোকাররম শিবলু ও কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শাহ মোস্তাক সৈকত।
বহিষ্কৃতদের মধ্যে সঞ্জয় ঘোষ, রায়হান পাটোয়ারী ও আল রাজী শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানার অনুসারী এবং মোকাররম শিবলু ও শাহ মুসতাক সৈকত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী হিসেবে রাজনীতি করেন।
এদিকে অভিযোগটির অধিকতর তদন্তের জন্য ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান। প্রক্টর আরো বলেন, বহিষ্কৃত পাঁচ ছাত্র কোনো ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। অপরাধের বিষয়টি তাদের পরিবারকেও অবহিত করা হয়েছে। এবিষয়ে অধিকতর তদন্ত আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে, তারপর স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, শনিবার সকাল ৬টায় ভূক্তভোগী মনির হোসন ফার্মগেট যাওয়ার জন্য রেব হয়ে বিশমাইল এলাকায় পৌঁছালে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রলীগ কর্মী তাকে পাকঁড়াও করে বোট্যানিকাল গার্ডেন এলাকায় তুলে নিয়ে আসে। এসময় তারা মনিরকে মারধর, ছিনতাই ও পরিবারের কাছে মোবাইলে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
খবর পেয়ে তার শ্বশুর আলমগীর হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন পরিবহন চালক ঘটনাস্থলে যায় এবং তিনজন ছিনতাইকারী ছাত্রলীগ কর্মীকে ধরতে পারলেও দুইজন তৎক্ষণাৎ পালিয়ে যায়।
আরো পড়ুন : জাবি ছাত্রলীগের ৩ কর্মী ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা
জাবি সংবাদদাতা, (৩০ মার্চ ২০১৯)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর মেয়ের জামাইকে মারধর, ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের ৫ কর্মীর বিরুদ্ধে। শনিবার ভোর ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকা থেকে অভিযুক্ত ছিনতাইকারীদের আটক করে ভূক্তভোগীর আত্মীয় ও পরিবহন চালকেরা। এ সময় তিনজন হাতেনাতে ধরা পড়ে ও দুইজন পালিয়ে যায়। পরে কর্মচারীরা ছিনতাইকারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টিরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করে।
আটককৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৪ তম ব্যাচের সঞ্জয় ঘোষ, ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের রায়হান পাটোয়ারী এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আল রাজী। পালিয়ে যাওয়া দুইজন হলেন- কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শাহ মুসতাক সৈকত ও দর্শন বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোকরম শিবলু।
এদের মধ্যে রায়হান পাটোয়ারী পূর্বের একটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানের ওপর নিষেদ্ধাজ্ঞা থাকলেও হলে অবস্থান করেই এখন আবার ছিনতাইয়ে জড়ান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় সঞ্জয় ঘোষ, রায়হান পাটোয়ারী ও আল রাজী শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি জুয়েল রানার অনুসারী। মোকারম শিবলু ও শাহ মুসতাক সৈকত শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চলের অনুসারী। ছিনতাই ও মারধরের শিকার মনির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক মো. নুরুল আলমের গাড়ি চালক আলমগীর হোসেনের জামাতা।
ছিনতাইয়ের শিকার মনির হোসেন বলেন, ‘আমি ফার্মগেট এলকায় গাড়ি চালাই। ভোরে শ্বশুড়বাড়ি থেকে ফার্মগেটে যাওয়ার জন্য রওনা দিলে, বিশমাইলে রাস্তার ঢালে অভিযুক্ত পাঁচজন আমার গতিরোধ করে দাড়াঁয়। একপর্যায়ে আমাকে পাকড়াও করে নগদ অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা টেনে হিচড়ে একটি ইজিবাইকে করে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর চেষ্টা করে ও শিকল দিয়ে মারধর করে। পরে তারা আমার স্ত্রীর কাছে কল করে ১ লাখ টাকা দাবি করে।’
এরপর স্ত্রীর কাছ থেকে খবর পেয়ে মনিরের শ্বশুর বাড়ির লোকজন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী ঘটনাস্থলে যায়। এসময় লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালানোর চেষ্টা করে। কর্মচারী ও আত্মীয়রা তিনজনকে আটক করতে পারলেও অন্য দুইজন পালিয়ে যান। পরে তাদেরকে প্রথমে নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে আসেন কর্মচারীরা। আর ভূক্তভোগী মনির হোসেনকে জাবি মেডিকেল থেকে সাভারের এটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযুক্ত সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘আমি জুনিয়রদের ফোন পেয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছনে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি মনিরকে ওরা মারধর করে তবে ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবি করা হয়নি।’
এ বিষয়ে জানতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি। সঞ্জয়কে ছাড়া বাকিদের আমি চিনিনা, ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আসম ফিরোজ উল হাসান বলেন, আমরা একটা অভিযোগপত্র পেয়েছি। আগামীকাল জরুরী ডিসিপ্লিন বোর্ড বসবে এবং পরবর্তী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।