১২ ঘন্টার মধ্যেই নারী বাইকার শাহনাজের স্কুটি উদ্ধার
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৭ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:০২
বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা নারী বাইকচালক শাহনাজ আক্তার পুতুলের চুরি হওয়া স্কুটি মোটরবাইকটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে এটি উদ্ধার এবং চোর জোবাইদুল ইসলাম জনিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে গতকাল দুপুরে তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার তার কার্যালয়ে স্কুটিটি শাহনাজের হাতে তুলে দেন। বাইকটি উদ্ধার করে দেয়ায় তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
স্কুটিটি পেয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে শাহনাজ বলেন, স্কুটিটি চুরি হওয়ার পর থেকে মাথা থেকে হেলমেট খুলিনি। হেলমেট যতক্ষণ আমার মাথায় ছিল, মনে হয়েছে স্কুটি আমার কাছেই আছে। হেলমেটকেই আমার বাইক মনে হয়েছে।
শাহনাজ আরো বলেন, আমার ভাবনার বাইরে ছিল বাংলাদেশের পুলিশ চাইলে এতকিছু করতে পারে। একটা অসম্ভবকে তারা সম্ভব করেছে। বাইকটি চুরি হওয়ার পর আমার মাও আমাকে বকা দেয়। আমাকে অন্য কোনো পেশা খুঁজতেও বলা হয়। কিন্তু আমি এটা করতেই পছন্দ করি। কারণ, আমার দুই সন্তানকে বাসায় দেখার কেউ নেই। সন্তানদের বাবাও আমি, মাও আমি। আমি তাদের কষ্ট দিতে চাই না। এই বাইক চালিয়ে আমি তাদের রিজিকের ব্যবস্থা করি।
শাহনাজ এই বাইক চালানো সংশ্লিষ্ট একটি চাকরি চেয়ে বলেন, আমি এই কাজটি করতেই পছন্দ করি। আমাকে কেউ এরকম একটি চাকরি দিলে ভালো হয়। আমি হাত পেতে টাকা নিতে পছন্দ করি না। এটা আমার নীতিতে নেই। গত দুই দিন ধরে রাইড শেয়ার করতে পারেননি শাহনাজ। বিষয়টি পুলিশের বিবেচনায় ছিল। তাই পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের পক্ষ থেকে শাহনাজের দুই সন্তানের জন্য ১০ হাজার টাকা দেন ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার।
গত মঙ্গলবার বিকেলে শেরেবাংলা নগর এলাকায় চালানোর বাহানায় শাহানাজের স্কুটিটি ছিনতাই করে জোবাইদুল ইসলাম জনি নামের এক যুবক। গতকাল দুপুরে জনিকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত কি না ও মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদন করেন শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম খান। অপর দিকে আসামির আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে দুই দিনের রিমান্ড দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১০ জানুয়ারি মিরপুরের শ্যামলী এলাকায় জনির সাথে পরিচয় হয় শাহনাজের। এ সময় জনি নিজেকে পাঠাও চালক বলে পরিচয় দেয়। সে শাহনাজকে একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে বলে আশ্বাস দেয়। তার কথা বিশ্বাস করায় শাহনাজকে ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় খামারবাড়ি এলাকায় আসতে বলে সে। তার কথামতো স্কুটি নিয়ে যথাসময়ে সেখানে আসেন শাহনাজ। এ সময় শাহনাজের স্কুটিতে উঠে বসে জনি। এরপর তার অনুরোধে বিমানবন্দর এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে ফের মানিক মিয়া এভিনিউয়ের রাজধানী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে আসে তারা। এরপর একটি টং দোকানে জনির সাথে চা খান শাহনাজ। জনি স্কুটি চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলে শাহনাজ তাকে অনুমতি দেন। এরপর চালানোর নামে কৌশলে জনি স্কুটিটি ছিনতাই করে পালিয়ে যায়।