২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

জামায়াত নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - সংগৃহীত

জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রশ্নে রায় পর্যন্ত অপেক্ষার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এখন জনমত এমনভাবে সৃষ্টি হয়েছে যে জামায়াতকে এ দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য যে নিবন্ধন লাগে নির্বাচন কমিশনে সেসব শর্ত তারা পূরণ করতে পারেনি বলে তাদের নিবন্ধন দেয়া হয়নি। কিন্তু তাদের নিষিদ্ধ করার জন্যে এরই মধ্যে কোর্টে একটি মামলা রয়ে গেছে। মামলার রায়টা যতক্ষণ পর্যন্ত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা দল হিসেবে জামায়াত বাতিল হয়েছে তা বলতে পারি না। যদি কোর্টে তাদের বিরুদ্ধে রায় হয়ে যায় তাহলে জামায়াত দল হিসেবে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। 

গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে চট্টগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজ ভাণ্ডারীর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল বুধবার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়। 
তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা বিষয়ে নজিবুল বশরের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা অপরাধী, মানুষ খুন থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা বিদেশে পলাতক আছে, সেই পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনার জন্য এরই মধ্যে আমাদের আলোচনা চলছে। বিশ্বাস করি, তাদের ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে পারব।’

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে এখনই কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না, এর কারণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল। তারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর ছিল। তারা এ দেশে নানা ধরনের অপরাধ করেছিল। সেই অপরাধের বিচার স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যার পর যখন জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই বিচার কাজ বন্ধ করে দেয়। তাদেরকে রাজনীতি করার সুযোগ দেয় এবং ভোটের অধিকার দেয়। যেটা আমাদের সংবিধানে ছিল না। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত করে তাদের সুযোগ করে দেয় জিয়া। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করবার জন্যে এরই মধ্যে কোর্টে একটি মামলা রয়ে গেছে। মামলার রায়টা যতক্ষণ পর্যন্ত না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা দল হিসেবে জামায়াত বাতিল হয়েছে তা বলতে পারি না। যদি কোর্টে তাদের বিরুদ্ধে রায় হয়ে যায় তাহলে জামায়াত দল হিসেবে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। তবে এটা খুবই ন্যক্কারজনক যে জামায়াত নিবন্ধিত না তবুও তারা বিএনপির সাথে জোট করে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছে। কিন্তু জনগণ তাদের ব্যাপকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা জানাই, ধন্যবাদ জানাই যে তারা তাদেরকে ভোট দেয়নি। সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। 

২০১৯ সালের মধ্যে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ করার পরিকল্পনা
জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজীর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। এরই মধ্যে এ প্রকল্পের ৬২ শতাংশ ভৌত কাজ শেষ হয়েছে। পাইলিংয়ের বিষয়ে কারিগরি কিছু জটিলতা ছিল, আমরা দেশী ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী এসব পাইলিংয়ের ডিজাইন পূর্ণ সম্পন্ন করতে কিছু বেশি সময় লেগেছে। এ সত্ত্বেও ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ ও পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা হয়ে বরিশাল পর্যন্ত রেল সংযোগ স্থাপনের কাজও চলছে।
ময়মনসিংহ-৮ আসনের সদস্য ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের প্রতি দীর্ঘ দিন ধরে চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন নির্মম অত্যাচার-নিপীড়নের প্রেক্ষিতে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এ দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৭ লাখ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট আশ্রয় নেয়। একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে এবং মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। 
এমপি মুজিবুল হকের (কিশোরগঞ্জ-৩) এক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল কর্মসংস্থান। এরই মধ্যে আমরা বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। দেশে এখন বহু টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকাসহ অনেক বেসরকারি সংস্থায় বহু যুবকের চাকরি হয়েছে। 
নুরন্নবী চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে গত ১০ বছরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মাধ্যমে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে এবং অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ায় উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ বিষয়ে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়। কোথায় কোনো কাজ করলে বেশি সংখ্যক মানুষ উপকৃত হবেন, সে দিকে চিন্তা করে আমি কাজ করি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সমগ্র বাংলাদেশের জনগণের জন্যই আমার কাজ। শুধু নিজের কোলে ঝোল টানার কাজ আমি করি না। নিজের এলাকা দেখব তা নয়, সার্বিকভাবে সারা দেশের সুষম উন্নয়নে বিশ্বাসী। তবে এটি ঠিক কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়াসহ দক্ষিণাঞ্চল সব সময় অবহেলিত ছিল।

তিনি বলেন, চর জানাজাতের মাটি বিমানবন্দরের উপযোগী নয়। বিমানবন্দর নির্মাণ করার মতো কোনো জায়গা কোটালীপাড়ায় নেই। সেটি সম্ভবও নয়। এটি করতে গেলে অনেক কৃষিজমি নষ্ট হয়ে যাবে। সেটি করতেও চাই না। দক্ষিণাঞ্চলে একটি বিমানবন্দর করার একটি পরিকল্পনা আমরা নিয়েছিলাম। কিন্তু অসুবিধাটা হলো চর জানাজাতের মাটি আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। ওখানটার মাটির বিমানবন্দর করার মতো শক্তি নেই। আমরা অন্যান্য জায়গায়ও এভাবে পরীক্ষা করেছি। তবে বিকল্প হিসেবে রাস্তার ব্যাপক উন্নতি করে দিচ্ছি। দ্রুত সেখানে যাওয়া যাবে। পদ্মা সেতু হয়ে গেলে অল্প সময়ের মধ্যে কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়া পৌঁছাতে পারব।


আরো সংবাদ



premium cement
ফল আমদানি কি আদৌ অত্যাবশ্যক ‘শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের অনুকম্পায় দল গঠন করছে না’ সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খলিল গ্রেফতার এনডিএম ও গণধিকার পরিষদের সাথে বিএনপির লিয়াজোঁ বৈঠক বিনা শর্তে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়ল শ্রমিকরা রেমিট্যান্স বাড়ায় দেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে শরণার্থীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ সুদান সরকারকে বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ এস আলম গ্রুপের, নইলে আন্তর্জাতিক সালিশির হুমকি একনেকে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন সালাহর চমকে উড়ল লিভারপুল ডেঙ্গুতে আরো ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৭২

সকল