মুন্সীগঞ্জে অনাগত সন্তান নিয়ে বিপাকে কিশোরী
- আব্দুস সালাম, মুন্সীগঞ্জ
- ১৩ মে ২০১৯, ১৩:১০
বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক; এরই এক পর্যায়ে বিষয়টি গড়ায় শারীরিক সম্পর্কে। এমন ফাঁদে পড়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের তেতৈলা গ্রামের অসহায় দরিদ্র পরিবারের এক কিশোরী। মেয়েটি এতটাই সহজ সরল যে কিছু বুঝে উঠার আগেই এমন একটি ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় পর পালিয়ে গেছে অভিযুক্ত ইয়াসিন মিয়া (২২)। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সে। ইয়াসিন উপজেলার বড়ভাটেরচর গ্রামের প্রবাসী নূরা মিয়ার ছেলে।
নির্যাতনের শিকার মেয়েটি নদী ভাঙ্গন কবলিত একটি এলাকায় সরকারি জায়গায় খুপরি ঘর তুলে বসবাস করে। অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি এখন কোথায় যাবে! অনাগত সন্তানকে নিয়ে কার কাছে যাবে; কিছুই জানে না সে। বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে মেয়েটি ও মেয়েটির মা। মেয়েটি বলছে, ‘আমি কোথায় যাব? কি করব? কিছুই জানি না।’
স্থানীয়রা জানান, ইয়াসিন এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় কয়েক দফা মেয়েটিকে ঘরে তুলে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বাড়ি ঘরে তালা দিয়ে পালিয়েছে। শনিবার তার বাড়ি গিয়ে বাড়ি ঘর তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্তের একজন প্রতিবেশী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, তাদের ঘর ছয়দিন তালা বন্ধ রয়েছে। তারা কোথায় গেছে কেউ বলতে পারে না। বাবা নুরু মিয়া প্রবাসী।
নির্যাতিত তরুণীর মা ও বড় ভাই বলেন, ‘মেয়ে বিশ্বাস করে ইয়াসিনকে ভালোবেসেছে। উকিল নানি নাসিমার সহযোগিতায় এই ঘটনা ঘটেছে। এখন আমার অবুঝ মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। আমরা এখন কি করব, কোথায় গিয়ে বিচার পাবো? এ নিয়ে কয়েকদফা স্থানীয়ভাবে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সাবেক চেয়ারম্যানের ভাতিজা বসে সমাধানের চেষ্টা করেছে। ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অনাগত সন্তান নষ্ট করার জন্য পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু টাকাও পাইনি। অসহায় মেয়েকে নিয়ে খুবই বিপদে আছি। আমার অবুঝ মেয়েকে দিয়ে আমার উকিল মা নাসিমা ইয়াসিনকে দিয়ে এই ঘটনা কেন ঘটাল? আমরা এর ন্যায়বিচার চাই।’
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ চেষ্টা করেছিলেন মেয়েটিকে ইয়াসিনের ঘরে তুলে দিতে। ইয়াসিনের পরিবার সর্বশেষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে বলে শুনেছি। অনাগত সন্তানটিকে ডিএনএ পরীক্ষা করাতে বেশ টাকার দরকার হবে। তাই তিনি মেয়েটির পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছি লিগ্যাল এইডের সহায়তা নিয়ে আদালতে মামলা করতে।