ফতুল্লায় অগ্নিদগ্ধ মা-ছেলের মৃত্যু, বাকি দুই শিশুর অবস্থাও আশংকাজনক
- নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
- ০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১০:২৩, আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১২:১৭
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার গিরিধারা এলাকায় গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ একই পরিবারের চারজনের মধ্যে মা ও এক সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আহত বাকি দু্ইজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রথমে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৫ বছর বয়সী সাফওয়ান মারা যায়। আজ শনিবার সকাল আটটায় মা ফাতেমা বেগম মারা যান।।
গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে অগ্নিকাণ্ডে মা ও তার তিন শিশুসন্তান দগ্ধ হয়। তারা হলেন ফাতেমা বেগম (৩৫) এবং তার তিন সন্তান সাফওয়ান (৫), ফারিয়া (৯) ও রাফি (১১)। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সাব্বির হোসেন বলেন, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে এ অগ্নিকাণ্ড দেখি। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে আসি। বাসার সিলিন্ডার লিকেজের কারণে এ আগুন ধরেছে।
গুরুতর দগ্ধ ফাতেমা বলেন, ‘রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারে লিকেজ ছিল। আমরা পাশের ঘর থেকে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছিলাম। হঠাৎ রান্না ঘরে বিস্ফোরণ হয়। গ্যাস ছড়িয়ে পড়ায় আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আর কিছু মনে নেই।
ফাতেমার স্বামী আবদুর রহিম জানান, তিনি একটি ফ্যাক্টরিতে চাকরি করেন। ঘটনার সময় তিনি বাসায় ছিলেন না। তার মেয়ে ফারিয়া স্থানীয় ডিলাইট স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে এবং ছেলে রাফি পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক ডা: সাইফুর রহমান জানান, ‘দগ্ধ চারজনের মধ্যে তিনজনের প্রায় ৯৫ শতাংশ এবং একজনের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাদের অবস্থা খুবই গুরুতর। এ অবস্থা থেকে রিকভার করা প্রায় অসম্ভব।
আরো পড়ুন : অগ্নিকাণ্ডে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের রুল
নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০১:০৫
রাজধানীর চকবাজারে সংঘটিত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরও পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সাথে নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত কমিটির দেয়া ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে বিবাদিদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য বিদ্যমান আইন যথোপযুক্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেয়া কেন হবে না তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল এ রুল জারির আদেশ দেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদিদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, কেমিক্যাল অপসারণসহ কয়েকদফা নির্দেশনা চেয়ে পৃথক কয়েকটি আবেদনের শুনানি শেষে এই আদেশ দেয়া হয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
পরে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল সাংবাদিকদের বলেন, দুই আইনজীবীর রিটে শুধু ১৭ দফার বাস্তবায়নের ব্যর্থতা নিয়ে রুল জারি করেছেন। বাকি তিনটি রিট চার সপ্তাহের জন্য স্ট্যান্ড ওভার রেখেছেন। এ ছাড়া কোর্ট অন্তর্বর্তীকালীন দুর্যোগ মন্ত্রণালয় যেন ক্ষতিগ্রস্তদের পাঁচ লাখ টাকা করে দেয় সে আদেশ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, তার জানা মতে, এক লাখ টাকা করে সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের দিয়েছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতের এ মনোভাব (৫ লাখ টাকা করে দেয়ার) সরকারকে জানাবেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন।
এর আগে গত সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, রাজধানীর চকবাজারে চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডের দায় কাউকে না কাউকে নিতে হবে। মানুষ যদি আগুনে পুড়ে মরে, তাহলে সিটি করপোরেশন কী করে? শুধু আন্তরিক হলে হবে না, কাজ করতে হবে। এটাকে দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এটা অবহেলা। এর দায় কাউকে না কাউকে নিতে হবে। একজন দায়িত্বশীল আরেকজনের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন এটা ঠিক না।
প্রসঙ্গত, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এ ঘটনায় ৬৭ জন নিহত হন। আহত হন প্রায় অর্ধশতাধিক। আহতদের মধ্য থেকে গতকাল আরো দু’জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৬৯ জনে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ, অ্যাডভোকেট অমিত দাস গুপ্ত, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার নূর মোহাম্মদ আজমী ও খন্দকার মো: সায়েদুল কাউছার এবং সাগুফতা তাবাসসুম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৃথক চারটি রিট আবেদন দায়ের করেন।
এসব রিটে রাজধানীর চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন ও কারখানা অপসারণ ও বিক্রির উদ্দেশে মজুদ করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিমতলী ট্র্যাজেডির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনাও চাওয়া হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা