ক্যাসিনো পণ্য আমদানি চার ব্যাংকের মাধ্যমে
- আশরাফুল ইসলাম
- ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০৬
ক্যাসিনোর নামেই চার ব্যাংকের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করেছে চারটি প্রতিষ্ঠান। আর এতে অনুসরণ করা হয়নি আমদানি নীতি। ক্যাসিনো পণ্য নামে আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলার (এলসি) সময় প্রচলিত নিয়মও মানেনি ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নিয়ম না মানায় ক্যাসিনো পণ্য আমদানির দায়ে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, অনেক প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের খেলার উপকরণের আড়ালে বেআইনিভাবে ক্যাসিনোর সামগ্রী আমদানি করেছে। কিন্তু এর মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠান চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে ক্যাসিনোর নামেই এসব উপকরণ আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানরগুলো হচ্ছে পুষ্পিতা এন্টারপ্রাইজ, এ ৩ এন্টারপ্রাইজ, নিনাদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ও এ এম ইসলাম অ্যান্ড সন্স। তারা বেসরকারি খাতের সাউথইস্ট ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকে এসব এলসি খুলে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এলসি খোলার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা সতর্ক ছিলেন না। কর্মকর্তাদের অসাবধানতায় ক্যাসিনোর নামেই পণ্য আমদানি করতে সক্ষম হয় আমদানিকারকেরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, ক্যাসিনো পণ্য আমদানির জন্য কোনো নীতিমালা নেই। ক্যাসিনোর কোনো লাইসেন্সও দেয়া হয়নি। আবার ক্যাসিনো পণ্য আমদানির কোনো অনুমোদনও নেই। এদিকে আমদানি নীতি অনুযায়ী যে ধরনের ব্যবসায়ের কোনো বৈধতা দেশে নেই, ওই ধরনের ব্যবসায়ের উপকরণ আমদানিরও কোনো বৈধতাও নেই। যেহেতু ক্যাসিনো ব্যবসায়ের কোনো বৈধতা নেই, সেহেতু ক্যাসিনোর উপকরণ আমদানি করাও অবৈধ। এছাড়া আমদানি নীতিতে বলা আছে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয় এমন কোনো পণ্য আমদানি করা যাবে না। ক্যাসিনো বা জুয়া যেহেতু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়, সে কারণে এ ধরনের পণ্য আমদানি করা যাবে না।
এদিকে, পাবলিক গ্যামলিং আইন অনুযায়ী দেশে জুয়া খেলা নিষিদ্ধ। ক্যাসিনো এক ধরনের আধুনিক জুয়া। প্রচলিত আইন অনুযায়ী ক্যাসিনো নিষিদ্ধ। তারপরও বিশেষ প্রয়োজনে সরকার বিদেশীদের জন্য ক্যাসিনো পরিচালনার জন্য লাইসেন্স দিতে পারে। সংবিধান অনুযায়ী মদ বিক্রি ও পান নিষিদ্ধ। তারপরও সীমিত আকারে মদ বিক্রি বা মদ পানের লাইসেন্স দেয়া হলেও ক্যাসিনো পরিচালনার এখন পর্যস্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়া হয়নি। ফলে দেশের যেসব স্থানে ক্যাসিনো পরিচালিত হচ্ছে তার পুরোটাই বেআইনিভাবে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একটি ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কোনো পণ্যের এলসি খোলার সময় পণ্যের নাম, এর শনাক্তরণ নাম্বার, কী কাজে ব্যবহƒত হবে এসব তথ্য উল্লেখ করতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যাসিনোতে ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে খেলাধুলার উপকরণ, বাণিজ্যিকভাবে আমদানি হচ্ছে। এ কারণে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাংকগুলো ততটা ক্ষতিয়ে দেখেনি। এটি অনেকটা অজান্তেই আমদানি হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুসন্ধানে যেসব ব্যাংকের নাম উঠে এসেছে, ওই সব ব্যাংকের কাছেই এ জন্য ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে।
এ দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, কাস্টমস পণ্য খালাসের সময় আগে দেখে আমদানি নীতিতে কী আছে। সেখানে আমদানি নিষিদ্ধ যেসব পণ্য আছে কি না বা ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত হানে এমন নিষিদ্ধ কোনো পণ্য আছে কি না, এমন পণ্য থাকলে তারা ছাড় করে না। এর বাইরে অন্য পণ্য থাকলে ছাড় করে দেয়। কিন্তু যারা মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে যারা বেআইনিভাবে ক্যাসিনোর উপকর আমদানি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা