ভিকটিম জানেন না তিনি অপহৃত হয়েছেন!
- আবু সালেহ আকন ও শামীম হাওলাদার
- ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৬:১৩
আদালতে অপহরণের মামলা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ভিকটিম আদালতে উপস্থিত হয়ে জানালেন, কেউ তাকে অপহরণ করেনি। তাকে অপহরণ করলে তার পরিবারের লোকজন মামলা দায়ের করবেন। কিন্তু পরিবারের লোক নন, স্বজন কিংবা বন্ধু নন; এমন লোক কেন মামলার বাদি হবেন। তার বক্তব্য হচ্ছে, তাকে মেরে ফেলে অন্য কাউকে ফাঁসানোর জন্যই এই অপহরণ মামলা সাজানো হয়েছে। গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে এমনই অভিযোগ করেন জয় মন্ডল নামে এক ব্যক্তি।
জয় মন্ডলকে অপহরণ করা মর্মে সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটির বাদি হলেন নেসার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নম্বর ৭ এ এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে জয় মন্ডল বলেন, অত্র মামলার বাদি নেসার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী তাকে অপহরণ দেখিয়েছে। এই অভিযোগ এনে নেসার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। কিন্তু তিনি অপহরণের শিকার হননি। তিনি স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। তিনি নিজ পরিবার পরিজনের সাথেই রয়েছেন। আর তিনি যদি অপহরণের শিকার হন তাহলেতো তার পরিবার-পরিজনের মামলা দায়ের করার কথা। কিন্তু মামলা করেছেন নেসার উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। নেসার আহমেদ তার একই এলাকার লোক। কিন্তু কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিবারের কেউ নন। জয় মন্ডল বলেছেন, তাকে ভিকটিম দেখিয়ে নেসার উদ্দিনের এই মিথ্যা মামলা করার উদ্দেশ্য রয়েছে। এমনও হতে পারে তাকে অপহরণ দেখিয়ে এক সময় তাকে হত্যা করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পারেন নেসার।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিবাদিগণ আইন অমান্যকারী দাঙ্গাবাজ, পরধন লোভী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। অতঃপর বাদি বিগত ৫ মার্চ দলিল নম্বর ১৯৬৪ মূলে ভিকটিম শ্রী জয় মন্ডল, বাবা মৃত রাম মোহন মন্ডল, মাতা শ্রীমতী যশোধ রানী মন্ডল। ৪৩ আইন উদ্দিন মাতবর রোড, মেরাদিয়া নয়াপাড়া, থানা খিলগাঁও জেলা ঢাকা এর সম্পত্তি আমমোক্তার নামা দলিল এবং বায়না মূলে সম্পত্তি ক্রয় করেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় মালিবাগ এলাকার জহুর ভিলা ৪৩২/৬ নম্বর বাসায় জোরপূর্বক রেখে ভিকটিমের খালি স্ট্যাম্পে আসামিরা স্বাক্ষর নেয়। আর অপহরণের হুমকি দেয়। পরবর্তীতে গত ১৮ আগস্ট জয় মন্ডলকে অপহরণ করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
জয় মন্ডল নয়া দিগন্তকে বলেন, তিনি একজন খেটে খাওয়া মানুষ। তাকে কেউ অপহরণ করেনি। নেসার উদ্দিন তার প্রতিপক্ষ আব্দুল হালিমসহ অন্যদের ঘায়েল করতে তাকে ভিকটিম সাজিয়েছে। তিনি যদি অপহরণই হয়ে থাকেন তবে মামলা করার কথাতো তার আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজনের কোনো সদস্যের। কিন্তু নেসার মামলা করলেন কেন। তিনি বলেন, আদালতে হাজির হয়ে বিচারকের কাছে বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন। বিচারক নেসার উদ্দিনকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নেসারের বাসাও মেরাদিয়া এলাকায়। ওই এলাকায় জমির কেনাবেচার সাথে তিনি জড়িত। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তিনি এই মামলাটি করেছেন বলে তাদের ধারণা। এ দিকে, বিষয়টি জানতে নেসার উদ্দিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাকে বার বার ফোন দিলে তা রিসিভ করেননি তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা