নার্স তানিয়া গণধর্ষণ ও হত্যা : ধর্ষক বোরহানকে খুঁজছে পুলিশ
- ফখর উদ্দিন ইমরান, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
- ১৫ মে ২০১৯, ১৭:০৫
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে চলন্তবাসে নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়াকে (২৪) গণধর্ষন করে হত্যার পর ৯ দিন অতিবাহিত হলেও অভিযুক্তদের অন্যতম বোরহানসহ চাঞ্চল্যকর এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামীদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। ধর্ষক বোরহানের খোঁজে সকল রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকার কল্যাণপুরে অবস্থিত ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টাফ নার্স শাহীনুর আক্তার তানিয়া তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার বাহেরচর গ্রামে আসার জন্য গত ৬মে সোমবার বিমানবন্দর বাস ষ্টেশন হতে বিকেলে স্বর্ণলতা ভিআইপি পরিবহনে উঠেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে কটিয়াদী ও উজানচর নামক স্থানে সকল যাত্রী নেমে পড়েন। বাসে তানিয়াকে একা পেয়ে বাসের চালক ও সহকারীরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে এরপর তার মাথায় আঘাত করে বাস থেকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে হত্যা করে।
পরে লাশ কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায়। ঐ রাতেই কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশ বাসের চালক নুরুজ্জামান নুরু ও সহকারী লালন মিয়াকে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া হতে গ্রেফতার করে। গত ৭মে মঙ্গলবার ময়না তদন্ত শেষে লাশ তার গ্রামের বাড়ীতে দাফন করা হয়। মঙ্গলবার রাতেই নিহত তানিয়ার পিতা মো. গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত নামা আরো ৩-৪ জনের নামে একটি ধর্ষণ ও হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হচ্ছেন, বাসের চালক নুরুজ্জামান নুরু, হেলপার লালন মিয়া, আল আমিন ও পিরিজপুর বাজারের ইজারাদার আব্দুল্লাহ আল মামুন। মামলার প্রধান আসামী নুরুজ্জামান নুরু গত শনিবার সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুনের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে নুরুজ্জামান নুরু তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। তার সাথে তার খালাতো ভাই বোরহান উদ্দিন ও বাসের সহকারী আল আমিন তানিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার সাথে জড়িত ছিল বলে জানায়।
চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামীসহ ধর্ষক বোরহান উদ্দিনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় হতাশা ব্যক্ত করে তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন জানান, ঘটনার পর ৯ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ তাদেরকে কেন গ্রেফতার করতে পারেননি। আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে নির্মমভাবে হত্যা করার বিচার কি আমি পাব না? তিনি অবিলম্বে অপরাধীদেরকে গ্রেফতারসহ হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার দাবী জানান।
এ দিকে তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়ার দাবিতে কটিয়াদী উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কটিয়াদী রক্তদান সমিতির পক্ষে সমন্বয়ক বদরুল আলম নাইম ও কটিয়াদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ'লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সচেতন নারী সমাজের সভাপতি তানিয়া সুলতানা গত ১৩ মে সোমবার এবং ১৪মে মঙ্গল বার দূপুরে কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান কেয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পৃথক স্মারক লিপি পেশ করেন। অন্যদিকে কিশোরগঞ্জসহ কটিয়াদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়োজনে ও বাজিতপুরে একই দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে।
লোহাজুরী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বিএসসি জানান, নির্মম এ হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদান করতে হবে। পুলিশের ভুমিকা আরো গতিশীল করার দাবী করেন তিনি। এ ঘটনার সাথে জড়িত কেউ যেন রেহাই পেতে না পারে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাজিতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সারোয়ার জাহান জানান ,বাসের হেলপার লালন মিয়া ১৪ মে মঙ্গলবার সন্ধায় কিশোরগঞ্জ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুনের নিকট নিজের দোষ স্বীকার করে নুরুজ্জামান নুরুর মত ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা