২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

টাইফয়েড, কলেরা অপুষ্টি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন কাল শুরু

-

নি¤œ ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে টাইফয়েড, কলেরা, অপুষ্টি এবং অন্ত্রের অন্যান্য রোগসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ এবং এসব মোকাবেলার উপায় বের করতে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁয় শুরু হচ্ছে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন (অ্যাসকড)। সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এটা হবে পঞ্চদশ অ্যাসকড এবং এর আয়োজন করছে আইসিডিডিআর,বি। সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেইটস ফাউন্ডেশন।
গতকাল রোববার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়। এতে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক জন ক্লেমন্স, উপনির্বাহী পরিচালক সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, আইসিডিডিআর,বির সিনিয়র বিজ্ঞানী ও অ্যাসকডের চেয়ারপারসন ড. ফেরদৌসী কাদরী, হার্ভার্ডের অধ্যাপক অ্যাডওয়ার্ড টি রাইয়ান।
সম্মেলনে আন্ত্রিক সংক্রমণ, পুষ্টি, নীতি এবং প্রচলিত অনুশীলনের সাম্প্রতিক বিষয়গুলোর ওপর আলোচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে বর্তমান বিশ্বের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সম্মেলনে এশিয়া ও আফ্রিকায় ব্যবহারের জন্য টাইফয়েড ভ্যাকসিন, ২০৩০ সালের মধ্যে কলেরা নির্মূলকরণ, আন্ত্রিক মাইক্রোবায়োটা এবং শৈশবকালীন অপুষ্টি এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ও আন্ত্রিক সংক্রমণের চিকিৎসার প্রভাববিষয়ক চারটি বিশেষ সিম্পোজিয়াম হবে।
১৯৮১ সালে অনুষ্ঠিত এ ধরনের সম্মেলন থেকেই ডায়রিয়ার জন্য মুখে খাওয়ার স্যালাইন আবিষ্কার হয়। তখন থেকেই অ্যাসকড বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ডায়রিয়া-জাতীয় রোগ এখনো বিশ্বব্যাপী শিশুমৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ। ২০১৭ সালে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ ডায়রিয়া-জাতীয় রোগে মারা যায়। দক্ষিণ এশিয়া ও সাব-সাহারান আফ্রিকায় ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে বেশির ভাগের মৃত্যুর কারণ ডায়রিয়া। বাংলাদেশে ২০১৯ সালে প্রায় ২৩ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন এবং মারা যান ৬ জন।
অধ্যাপক সানিয়া তাহমিনা বলেন, ঢাকা শহরে কলেরা আক্রান্তের স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব এলাকায় ১২ লাখ মানুষকে দু’টি করে ২৪ লাখ ডোজ কলেরা ভ্যাক্সিন খাওয়ানো হবে।
ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, সারা দেশে ৬৫ হাজার শিশুকে টাইফয়েডের টিকা দেয়া হয়েছে। ফলে টাইফয়েড কমে গেছে কিন্তু এর সংক্রমণ রয়েই গেছে। বাংলাদেশে বছরে টাইফয়েড ও কলেরায় তিন লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। টিকা ও ভ্যাক্সিন দেয়ার ফলে আক্রান্তের হার কমে যাবে। শুধু কলেরায় বাংলাদেশে বছরে আক্রান্ত হচ্ছেন এক লাখ মানুষ এবং মারা যাচ্ছেন তিন থেকে সাড়ে চার হাজার।
আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক জন ক্লেমেন্স বলেন, ‘ঢাকার এই পঞ্চদশ অ্যাসকডের লক্ষ্য হলো লাখ লাখ মানুষ যেসব বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে এর সমাধানে নতুন জ্ঞান অর্জন, জ্ঞান বিনিময় এবং আমাদের গবেষণা, উদ্ভাবন ও কর্মকৌশলগুলো আলোচনা ও মূল্যায়ন করা।’
বিজ্ঞানভিত্তিক সেশনগুলোতে এবং তার বাইরেও ১৮টি দেশের গবেষক, স্বাস্থ্য পেশাজীবী, নীতিনির্ধারক এবং স্বাস্থ্য কার্যক্রম ব্যবস্থাপক এই সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ের সুযোগ পাবেন। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল