ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা সুসংহত করতে সংশ্লিষ্টদের সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে

বাংলাদেশ ইসলামিক ল রিসার্চ অ্যান্ড লিগ্যাল এইড সেন্টার আয়োজিত স্টাডি সেশন ও মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সুসংহত করতে হলে মালিক পক্ষ, টপ ম্যানেজমেন্ট, শিক্ষাবিদ ও উলামাদের মতবিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ভিত আরো মজবুত ও টেকসই হবে।
পল্টন এবিসি মিলনায়তনে গত রোববার শিক্ষাবিদ, ব্যাংকার, গবেষক ও উলামাদের উপস্থিতিতে আধুনিক সমস্যা সমাধানে মাকাসিদুশ শারইয়্যাহর প্রয়োগ : ড. ইউসুফ আল কারজাভীর নির্দেশনা শীর্ষক স্টাডি সেশন এবং ‘বাংলাদেশের ইসলামী ব্যাংকিংয়ে প্রোডাক্ট উন্নয়ন ও উদ্ভাবন’ সম্পর্কিত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামিক ল রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় উভয় সেশনে সূচনা বক্তব্য রাখেন সুলতান যাইনুল আবেদিন বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার সহকারী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান ও ইসরা মালয়েশিয়ার সিনিয়র গবেষক মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে মতামত ব্যক্ত করেন আইবিসিএফ-এর জেনারেল সেক্রেটারি বিশিষ্ট ব্যাংকার মাহফুজুর রহমান, সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ শরীফ ও সৈয়দ সাখায়াত হোসাইন, ইসলামী ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক ড. মীজানুর রহমান, রহমতুল্লাহ খন্দকার, ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ডিভিশনের প্রধান ড. নুরুল ইসলাম, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সেক্রেটারি ফরীদ উদ্দীন আহমেদ, ঢাকা ব্যাংকের শরিয়াহ সেক্রেটারি কামরুজ্জামান, ব্যাংক এশিয়ার ইসলামী ব্যাংকিং প্রধান এ কে এম মীজানুর রহমান, মুনীরুল হক, ইসললামী ব্যাংকের এসভিপি জিল্লুর রহমান পাটওয়ারী, পূবালী ব্যাংকের শরিয়াহ সেক্রেটারি এ কে এম নুরুন্নবী, মালীবাগ মাদরাসার মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম, মারকাজুল ফালাহের প্রিন্সিপাল মুফতি নাজমুল হুদা নোমানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এহসান যুবায়ের, সহকারী অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল, সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ, সহকারী অধ্যাপক ড. রেজাউল হোসাইন, সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা জাহিদুজ্জামান, বিশিষ্ট সমাজ গবেষক এহসানুল কবীর মোভ ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট মনযুরুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ব্যাংকের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক আলেম উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, মাকাসিদ যেকোনো বিষয়ের গুরুত্ব ও প্রায়োগিক পদ্ধতি নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক যেকোনো সমস্যা থেকে উত্তরণ ও সমাধান উদ্ভাবনে মাকাসিদ অনুসরণের কল্যাণ পরীক্ষিত। শিক্ষাবিদ ও পেশাজীবীদেরকে এ বিষটির প্রতি গুরুত্বারোপ করার জন্য তারা আহ্বান জানান।
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের বিদ্যমান প্রোডাক্ট ও নতুন প্রোডাক্ট উদ্ভাবন সম্পর্কে ড. হাবীবুর রহমান বলেন, মালয়েশিয়ার মুসলমানদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংকিং কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। সেখানে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের অসংখ্য প্রোডাক্ট রয়েছে, জনগণকে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে আকৃষ্ট করতে তাদের চাহিদা পূরণে সক্ষম এ ধরনের প্রোডাক্ট বাড়াতে হবে। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা, এ কথা ইসলামী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের সেবা সবার জন্য উপযোগী করে প্রমাণ করতে হবে, তাহলে ইসলামী ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সব মানুষের কাছে প্রিয় ও দ্রুত সম্প্রসারিত হবে।
মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ইসলামী ব্যাংকিংয়ে মালিক পক্ষের প্রত্যাশা রক্ষা করেও তৃণমূলপর্যায়ে ইসলামী ব্যাংকিং প্রোডাক্ট সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। এ জন্য প্রতিটি ব্যাংকের উচিত সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র শক্তিশালী গবেষণা সেল তৈরি করে মেধাবী জনবল নিয়োগ করা। এ ক্ষেত্রে সরকারের ব্যাংকিং বিভাগ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বিআইবিএম, আইবিটিআরএ, সেন্ট্রাল শরিয়াহ, আইবিসিএফ এবং বাংলাদেশ ইসলামিক ল রিসার্চ অ্যান্ড লিগ্যাল এইড সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করলে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের ভিত আরো মজবুত ও টেকসই হবে। বক্তারা বলেন, ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সুসংহত করতে হলে মালিক পক্ষ, টপ ম্যানেজমেন্ট, শিক্ষাবিদ ও উলামাদের মতবিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। বিজ্ঞপ্তি।