কম খরচে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছে খুলনা আদ-দ্বীন আকিজ মেডিক্যাল কলেজ
- শেখ শামসুদ্দীন দোহা খুলনা ব্যুরো
- ০৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
খুলনা মহানগরীর বৈকালী এলাকার নাম শুনলেই একসময় সবার মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ভর করত। খুলনার নামকরা রাজনৈতিক নেতা আর প্রভাবশালী কোনো ব্যক্তির নাম উচ্চারিত হলেই আগে চলে আসত বৈকালীর নাম। এখানেই রূপসা ইন্টারন্যাশনাল হোটেল। তার গা ঘেঁষে খুলনা জিপিও, আর সামনে বিশাল এলাকাজুড়ে খুলনার সিএসডি খাদ্যগুদাম ও কড়ই তৈরির কারখানা। ৮০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০০০ সাল পর্যন্ত এই এলাকাজুড়ে দখল পাল্টা দখলে প্রাণ ঝরেছে অনেকের। খই ফোটার মতো বোমার শব্দ আর অস্ত্রের ঝনঝনানিতে প্রকম্পিত হতো প্রায়ই।
এখন আর সেই পরিবেশ নেই। পরিবর্তে বৈকালী এখন শত শত রোগী আর শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে। চিরচেনা পরিবেশকে পাল্টে দিয়েছে আদ-দ্বীন আকিজ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
রূপসা ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের জায়াগায় আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা: শেখ মহিউদ্দিনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আদ-দ্বীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। পদ্মার এপারে আর দুই-চারটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকেও কম খরচে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে খুলনাঞ্চলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পছন্দে বর্তমানে এগিয়ে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
খুলনা-যশোর মহাসড়ক লাগোয়া সাড়ে সাত বিঘা জমির ওপর আট তলা ভবন। সাজানো গোছানো মনোমুগ্ধকর পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাসে গাছ-গাছালির সবুজের সমারোহ। প্রধান প্রবেশদ্বারেই চোখ জুড়ানো ফুলের বাগান। আট তলা ভবনের পুরোটাই বিদেশী টাইলস আর চোখধাঁধানো ফিটিংস। পুরো ভবনটাই ঝকঝকে তকতকে। ২০১৪ সালে কলেজটি উদ্বোধনের পর বর্তমানে এখানে অধ্যয়নরত দু’টি ব্যাচে ৮১ জন শিক্ষার্থী। এখানে ছাত্রীদের জন্য দু’টি ও ছাত্রদের জন্য একটি আবাসিক হল আছে। সম্পূর্ণ আবাসিক হওয়ায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকেরা এক প্রকার নিশ্চিন্তেই থাকেন। এই মেডিক্যাল কলেজের সব কিছুই চলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে। পাঠ্য ও গবেষণার বইয়ের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে রয়েছে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। লাইব্রেরিতে ১৫ শ’ ২৬টি বই রয়েছে। এ ছাড়া দেশী-বিদেশী জার্নাল রয়েছে ৭০টি। রয়েছে মানসম্মত ক্যাফেটেরিয়া।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা: পরিতোষ কুমার রায় বলেন, দেশে সরকারি মেডিক্যাল কলেজের আসনসংখ্যা সীমিত। এ কারণে অনেকেরই সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয় না। সে স্বপ্ন আমরা পূরণ করছি। কিছু কিছু বেসরকারি মেডিক্যালে পড়তে গিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের বিরাট অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। এ ক্ষেত্রেও আমরা অনেক কম খরচে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করছি। সরকারি নিয়মে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমবিবিএস ও ইন্টার্নি কোর্সের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা আছে। সেখানে আমরা প্রথম ব্যাচে জনপ্রতি ৬ লাখ ৭৫ হাজার ও দ্বিতীয় ব্যাচে ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফি নিচ্ছি। গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রায় নি¤œ খরচে পড়াশোনার ব্যবস্থা। সর্বোপরি ডাক্তার হতে গেলে সবার আগে দরকার সুন্দর পরিবেশ। এ ক্ষেত্রে আদ-দ্বীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা: শেখ মহিউদ্দিন কলেজটিকে সমৃদ্ধ করতে অনেক আন্তরিক।
অধ্যক্ষ জানান, কলেজটি সম্পূর্ণ আবাসিক। অনেক জায়গায় ভর্তির পর অভিভাবকেরা চিন্তায় থাকেন তাদের সন্তানদের থাকা-খাওয়া নিয়ে। কিন্তু এখানে সে চিন্তা তাদের করতে হবে না। অন্য যেকোনো মেডিক্যাল কলেজের চেয়ে খরচ কম হওয়ায় এরই মধ্যে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা নতুন ব্যাচে ভর্তি হওয়ার জন্য খোঁজখবর নিচ্ছেন।
কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ডা: মো: আশফাকুর রহমান বলেন, কলেজটিতে ৬৭ জন অভিজ্ঞ শিক্ষক রয়েছেন। যারা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে পাঠদান করে থাকেন। বেশির ভাগ মেডিক্যাল কলেজে একটি বিভাগে একজন ফুল টাইমার প্রফেসর থাকেন। বাকিরা পার্ট টাইমার। আমাদের কলেজে প্রতিটি বিভাগে দুইজন ফুল টাইমার প্রফেসর রয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা