২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

‘আমাকে আর পাবে না’, ভোটে হেরে বললেন নায়িকা

- ছবি : সংগৃহীত

আর আমাকে পাবে না, রাজনীতিই করবো না। অনেক আশা নিয়ে নেমেছিলাম ভোটের মাঠে; কিন্তু হলো না। গতকাল ভোটে হেরে এমন অভিব্যক্তিই ছিলো ভারতীয় অভিনেত্রী মুনমুন সেনের।

বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা। আসানসোলের ভোটগণনা কেন্দ্রে সপ্তম রাউন্ডের গণনা চলছে। হাইওয়ের পাশের চার তারকা হোটেলে হঠাৎ তৎপরতা। জানা গেল, তিনি হোটেল ছাড়ছেন। টি-শার্ট, ট্রাউজার্স পরে ছুটতে থাকা তার নিরাপত্তারক্ষী বললেন, ‘ম্যাডামজি’র মন খুব খারাপ। এখনই কলকাতায় ফিরবেন।’ কয়েক মিনিটেই বিধ্বস্ত চেহারায় সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলেন মুনমুন সেন।

নীলপেড়ে আকাশি শাড়িটার আঁচল দিয়ে ঘাম মুছে বললেন, ‘আই অ্যাম জাস্ট ফিনিশড। আর রাজনীতি করব না। মেয়েরা ফোন করে বলল, ওখানে বসে কী করছ? এখনই কলকাতায় ফিরে এসো।’

বৃহস্পতিবার ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন বেলা যত গড়িয়েছে, ততই ভারতজুড়ে বিজেপি-বিরোধী শক্তির ভরাডুবির ছবি স্পষ্ট হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলেছে নরেন্দ্র মোদীর দল। রাজ্যটিতে বিজেপির চেয়ে বেশি আসন পেলেও আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করতে পারেনি তৃণমূল।

২০১৪ সালে বাবুল সুপ্রিয় এই কেন্দ্র থেকে জেতার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যার উপরে আস্থা রেখেছিলেন, সেই মুনমুন অবশ্য এ দিন বেলা ১২টাতেও বলেছিলেন, ‘এখনও বলছি, আমিই জিতব।’

ততক্ষণে অবশ্য প্রতি রাউন্ড ভোটগণনার পরে মুনমুনের থেকে জয়ের ব্যবধান বেড়েই চলেছে বাবুলের। ‘আমিই জিতব’র পাশাপাশি মুনমুনকে স্বগতোক্তি করতেও শোনা যায়, ‘তৃণমূলের লোকেরা যে আমায় বলেছিল আমিই জিতব! তবু বাবুল কেন এত ভোট পাচ্ছে?’

আসানসোল ‘জয় করতে’ বুধবার দুপুরেই কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছিলেন মুনমুন। সঙ্গে ছিল পছন্দের বেশ কয়েকটি শাড়ি। উঠেছিলেন এক মাস চার দিনের প্রচারের আস্তানা হাইওয়ে লাগোয়া ওই হোটেলে। বেলা ১০টা নাগাদ পছন্দের আকাশি-নীল শাড়ি, লাল টিপ পরে গণনা কেন্দ্রে যান মুনমুন। প্রথম দু’রাউন্ডেই প্রধান প্রতিপক্ষ বাবুল বেশ খানিকটা ‘লিড’ নিয়েছেন দেখে দ্রুত গণনা কেন্দ্র ছাড়েন সুচিত্রা-কন্যা। আসানসোলের এক দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে মোবাইল ফোনটিও বন্ধ করে দেন তিনি। তবে মিনিট তিরিশের মধ্যেই এক দলীয় নেতার কাছে আসা ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ফোনে ফের গণনা কেন্দ্রের দিকে রওনা দেন মুনমুন। সেখানে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে বেরিয়ে আসার সময় দৃশ্যতই বিব্রত ও বিধ্বস্ত দেখায় তাকে। দলীয় নেতাকর্মীদের কাউকে কাউকে তিনি বলতে থাকেন, ‘দেখব, তুমি এখানে কী করে থাক! একটা কাজও ঠিক করোনি তোমরা।’

আর এক দলীয় নেতার হাত ধরে কাছে টেনে নিয়ে বলেন, ‘এক মাস চার দিন ধরে এত খাটলাম, মানুষ বুঝল না!’

বেলা ৩টায় হার প্রায় নিশ্চিত বুঝে আসানসোল ছাড়ার মুখে মুনমুন বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঢেলে সব সাজাতে হবে। উনি একা লড়ে যাচ্ছেন; কিন্তু তার নীচের লোকগুলো কেউ ভাল নয়। ওরাই আমায় হারিয়ে দিয়েছে।’

তিনি জানান, তার মতো অভিনেত্রীকে সকলেই দলে চেয়েছিল। তবে তিনি যাননি। বললেন, ‘প্রণব মুখোপাধ্যায়ও আমাকে ডেকেছিলেন। আমি রাজনীতির লোক নই। তবে রাজনীতিতে এসেছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। এর পরে আমায় ডাকলে আর পাবে না।’

সকালের লাল টিপ তখন কপালে নেই। কয়েক বিন্দু জলে চোখের গাঢ় কাজলও হাল্কা। হোটেলের এক নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ‘দিদি, হার-জিত তো আছেই।’ গাড়িতে ওঠার মুখে গেটে দাঁড়ানো হোটেলকর্মীদের ভিড়ের দিকে হাত নেড়ে সেই ‘দিদি’ বললেন, ‘তোমরা সবাই ভাল থেকো। খুব মিস করব।’ সূত্র: আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement
বিনা শর্তে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়ল শ্রমিকরা রেমিট্যান্স বাড়ায় দেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে শরণার্থীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ সুদান সরকারকে বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ এস আলম গ্রুপের, নইলে আন্তর্জাতিক সালিশির হুমকি একনেকে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন সালাহর চমকে উড়ল লিভারপুল ডেঙ্গুতে আরো ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৭২ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী চীন সখীপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ নাসিরনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার ১১০০ সেনা হতাহত হয়েছে : দাবি সিউলের

সকল