পুলিশি বাধার মুখে ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থলে যেতে পারেনি মাওলানা ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দল
- বেলাল হোসাইন, খাগড়াছড়ির তাইন্দং থেকে ফিরে
- ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৩৫, আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ২০:৪৮
ফেনী নদীর উৎসস্থল ভগবান টিলার ফেনী ছড়া যাওয়ার পথে তাইন্দংয়ের বটতলী এলাকায় পুলিশি বাধার মুখে পড়ে মাওলানা ভাসানী অনুসারী পরিষদের বিশেষজ্ঞ টিম।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর নেতৃত্বে ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল নদীর উৎসস্থল খাগড়াছড়ির আচালং-তাইন্দংয়ের বটতলী থেকে ফেনী ছড়ার দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তাইন্দং ছড়া পরিদর্শন করেন। এসময় তারা স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তারা স্থানীয় বাঙ্গালী পাহাড়ীদের সঙ্গে ফেনী নদীর উৎস বিষয়ে চলমান বিতর্ক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। এসময় ভাষানী অনুসারীরা খোলামেলা মতবিনিময় করেন।
প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, গণদলের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা এ টি এম গোলাম মাওলা চৌধুরী, পানি বিশেষজ্ঞ ও জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. ম ইনামুল হক, ইউনূছ মৃধা, ফরিদ উদ্দিন, মো: ইসমাইল, কে. এম রকিবুল ইসলাম রিপন এবং ভাসানী অনুসারী পরিষদের ফেনী ও স্থানীয় সদস্যরা।
আগামীকাল বুধবার সকালে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলটি ফেনী নদীর আমলী ঘাট থেকে মহুরী প্রজেক্ট পর্যন্ত নদীপথে পরিদর্শন করবেন। এরপর বিকেলে ফেনীতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সম্প্রতিকালে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ভারতে যে ফেনী নদীর পানি চুক্তি করেছে তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। আমরা সেটি লক্ষ্য করে আজকে ভাষানী অনুসারী পরিষদ নেতৃবৃন্দ পানি বিশেষজ্ঞদের সাথে নিয়ে ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল পরিদর্শন করি এবং আমরা নিশ্চিত হয়েছি ফেনী নদী কোনো আন্তর্জাতিক নদী নয়। এটি বাংলাদেশের নদী। কজেই অমীমাংসিত ৫৪টি অভিন্ন নদীর হিস্যার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত ফেনী নদীর পানি দেয়া আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন।
গণদলের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেছেন, ফেনী নদীর উৎস বাংলাদেশের ভূখন্ডের মধ্যে, এ নিয়ে চলচাতুরির কোন সুযোগ নেই। কিন্তু দু-দেশের জনগণের বন্ধুত্বপূর্ণ সর্ম্পক অটুট রাখতে সম্পাদিত ১.৮২ কিউসেক পানি চুক্তিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু গেল ১০/১২ বৎসর ধরে অবৈধভাবে উচ্চ ক্ষমতাস¤পন্ন ৩৬টি পাম্পের মাধ্যমে নদী থেকে পানি তুলে নিয়ে যাওয়ার চলমান প্রক্রিয়া পানি চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ার পর চলমান প্রক্রিয়া বন্ধ হবে কিনা এটি এখন বাংলাদেশের মানুষের প্রশ্ন।
পানি বিশেষজ্ঞ ও জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. ম ইনামুল হক বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ সরকার সাব্রুম শহরের বাসিন্দাদের পানি সরবরাহের জন্য ১.৮২ কিউসেক পানি উত্তোলনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু আমাদের উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে বিজিবি মারফৎ জানা যায়, ভারত ৩৬টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পের মাধ্যমে ৭০ কিউসেকের বেশি পানি কোনরকম সমঝোতা ছাড়াই উত্তোলন করে যাচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশের মানুষ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।