২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

অর্থসহায়ক পেল ঢাবির ভর্তিযুদ্ধে জেতা পটিয়ার প্রতিবন্ধী সেই রাফি

-

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিযুদ্ধে জেতা পটিয়ার দৃষ্টিশক্তিহীন অস্বচ্ছল সাইফুদ্দিন রাফি বাবুর পাশে দাঁড়ালেন রাজধানীতে বসবাসরত চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বাসিন্দা শামসুল হুদা নামের জনৈক সমাজসেবক।

‘অন্ধত্বকে জয় করে ঢাবিতে চান্স পেয়েছে রাফি’ শিরোনামে দৈনিক নয়া দিগন্তে সংবাদ প্রকাশ হয়।

গতকাল শনিবার এ প্রতিবেদককে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে এ সুখবরটি জানান শামসুল হুদার পিএস এনামুল হক। তিনি জানান, গতকাল নয়া দিগন্তে ওই সংবাদ পেয়ে প্রতিমাসে সাইফুদ্দিন রাফির পড়াশোনার জন্য প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

গতকাল বিকালে পটিয়া উপজেলার উজিরপুর গ্রামে রাফিদের বাড়িতে গিয়ে ওই সংবাদ দেওয়ার পরে পরিবারের সদস্যরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় রাফির বড় বোন স্কুলশিক্ষিকা রিফাত আরা আঁখি ও মা নাজনীন আক্তার বলেন, ছেলে ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকে তার পড়াশোনার খরচ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। আজকে এই খবর পেয়ে বড়ই স্বস্তি পেলাম। এ সময় তিনি ওই সমাজসেবকে প্রাণ খুলে দোয়া করেন।

সাইফুদ্দিন রাফি জানায়, সে অন্যের সহযোগিতায় ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে খ ইউনিটে প্রায় ৪২ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫১.৭৫ নম্বর পেয়ে (২০০ নম্বরের মধ্যে) ১১১৬তম হয়েছে (২৩৭৮ জনের মধ্যে)। ইতোমধ্যে অনলাইলে ভর্তি ফরম পূরণ করেছে।

রাফির মা নাজনীন আকতার বলেন, ছোটবেলায় চোখে চুন পড়ে তার দু’চোখের দৃষ্টিশক্তি চলে যাওয়ার তার বাবা ইউনিয়ন কৃষি উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজি শিক্ষক মরহুম আজহার উদ্দিনসহ পরিবারের সবাই ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। সহায়-সম্বল বিক্রি করে একমাত্র ছেলের চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে বিফল হন। পরে তাকে চট্টগ্রাম নগরীর মুরাদপুরের সমাজসেবার অধীনে সরকারি অন্ধ বধির বিদ্যালয়ে (পিএইচটি) ভর্তি করা হয়। সেখানে ব্রেইল পদ্ধতিতে পঞ্চম শেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে। চট্টগ্রামে ওই পদ্ধতি পড়াশোনার আর কোনো উপায় না থাকলেও পরিবারের সদস্যরা দমে যায়নি। বাবার স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করা হয় রাফিকে।

রাফি কানে শুনে ও মাঝে মধ্যে রেকর্ড করে পড়াশোনা চালিয়ে যেত। আর পরীক্ষার সময় বোর্ড থেকে অনুমতি নিয়ে অন্যের লেখনির মধ্যদিয়ে পড়ছিল। আর ক্লাশে প্রথম স্থান পেয়ে আসছিল। পরিবারের সবাই তার পড়াশোনার দক্ষতায় আবেগ আপ্লুত হয়ে যেত।

ঠিক ওই সময়ে রাফিদের পরিবারের নেমে আসে শোকের ছায়া। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ রাফির বাবা আজহার উদ্দিন ২০১৫ সালের ৫ জুলাই বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন।

রাফির মা নাজনীন বলেন. রাফির বাবাকে হারিয়েও দমে যাননি তিনি। অনেক কষ্ট করে সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছেন। বর্তমানে রাফির বড় বোন রিফাত আরা আঁখি একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মেঝ বোন ইফাত আরা জুঁই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএম ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্রী।

রাফি ২০১৭ সালে ইউনিয়ন কৃষি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০১৯ সালে পটিয়া সরকারি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সাথে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়। সবশেষ ঢাবিতে ¯œাতক ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।

রাফি জানিয়েছে, তার বাবার মতো সেও ইংরেজিতে মাস্টার্স পাশ করে ইংরেজির অধ্যাপক হতে চায়।

রাফির মা নাজনীন আকতার ও বোন আঁখি সকলের আন্তরিক দোয়া কামনা করেছেন যেন রাফি জীবনে সফল হতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
ফল আমদানি কি আদৌ অত্যাবশ্যক ‘শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের অনুকম্পায় দল গঠন করছে না’ সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খলিল গ্রেফতার এনডিএম ও গণধিকার পরিষদের সাথে বিএনপির লিয়াজোঁ বৈঠক বিনা শর্তে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে সাড়ে ৩ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়ল শ্রমিকরা রেমিট্যান্স বাড়ায় দেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে শরণার্থীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে দক্ষিণ সুদান সরকারকে বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ এস আলম গ্রুপের, নইলে আন্তর্জাতিক সালিশির হুমকি একনেকে ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন সালাহর চমকে উড়ল লিভারপুল ডেঙ্গুতে আরো ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৭২

সকল