২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

শ্রীলঙ্কায় বিমানবন্দর উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল হামলাকারীরা

বন্দরনায়েকে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট - ছবি : সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার কলম্বোয় গতকাল ইস্টার সানডে চলার সময় কয়েক দফা বোমা হামলায় ২৯০ জন নিহত হয়েছে। আট দফা বোমা বিস্ফোরণে আরো আহত হয়েছে ৫০০ মানুষ। জানা গেছে, হামলাকারীদের আরেকটি বড় ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তারা দেশটির একটি বিমানবন্দরেও বড় ধরনের হামলা চালাতে চেয়েছিল।

পুলিশ জানায়, কলম্বোর বন্দরনায়েকে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টের সামনের মূল প্রবেশ মুখে ছয়ফুট লম্বা একটি হাতে বানানো পাইপ বোমাসহ প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক পড়ে থাকতে দেখা যায়। এতে সেখানে নতুন করে তীব্র আতঙ্ক তৈরি হয়। পুলিশ পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে। পরে ওইসব বিস্ফোরক নিরাপদ একটি স্থানে সরিয়ে নিয়ে ধ্বংস করে দেয়া হয়। পুলিশ ধারণা করছে, এ বিস্ফোরকের মাধ্যমে পুরো এয়ারপোর্টটি উড়িয়ে দেয়া যেত।

সিরিজ বোমা হামলায় প্রায় তিনশ মানুষ নিহত হওয়ার পর দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কারফিউ চলবে।

খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা যখন ইস্টার সানডে পালন করছিল তখন এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রথম হামলা হয় স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৯টায়। তিনটি গির্জায় অন্তত ছয়টি বিস্ফোরণ হয়েছে। যে গির্জাগুলোতে বিস্ফোরণ হয়েছে সেগুলো কোচ্চিকাডে, নেগম্বো ও বাট্টিকালোয়ায় অবস্থিত।

এছাড়া রাজধানী কলম্বোতে অবস্থিত তিনটি পাঁচ তারকা হোটেলে বিস্ফোরণ হয়েছে। কারা এই হামলা চালিয়েছে তা জানা যায়নি, তবে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের ধারণা, কোনো কোনো স্থানে আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী অংশ নিয়েছিল। বিভিন্ন গির্জার আশেপাশে এখন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে, এবং পুলিশের তদন্ত চলছে।

২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কায় গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এটাই সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ভয়াবহ হামলা।

দেশটির পুলিশ জানায়, মূলত টার্গেট ছিল খ্রিষ্টান, হোটেলের ভিনদেশের অতিথিরা এবং অবশ্য বিদেশিরা। নিহত ছাড়াও যে ৫০০ জন আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এ অবস্থায় বিমানবন্দরের মতো স্পর্শকাতর একটি স্থানে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ নতুন করে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। বিভিন্ন স্থানে চিরুনি অভিযান চলছে। অনেক স্থানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।

 

আরো পড়ুন : শাহজালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৫৮

শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলার পর ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরসহ দেশের অন্যান্য বিমান বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

বিমানবন্দর আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এসপি আলমগীর হোসেন শিমুল রোববার রাতে বাসসকে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের ফিল্ড কমান্ডারদের (এসপি/ডিসির মতো মাঠ পর্যায়ের অফিসার) সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতর। যেকোনো ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা মোকাবিলার লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়।

এসপি আলমগীর হোসেন শিমুল জানান, শ্রীলঙ্কায় কলম্বোতে রোববার ভয়াবহ বোমা হামলা ও বিস্ফোরণের ঘটনার পর ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তার ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি জানান, বিমান বন্দরের প্রবেশর গেট থেকে শুরু করে ভিভিআইপি, ভিআইপি ও ডমেষ্টিক লাউঞ্জসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশী করা হচেছ।

এ ব্যপারে বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূরে আযম মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাসসকে জানান, শ্রীলঙ্কায় কলম্বোতে বোমা হামলার ঘটনার পর শাহজালাল বিমানবন্দরসহ আমার থানা এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
ওসি জানান, গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপাস্ট বসানো সহ তল্লাশী কার্যক্রম চলছে। সেই সাথে পুলিশ চেকপোষ্ট, পুলিশী টহল জোরদারসহ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সদস্যদেরকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের সহকারী মহা-পরিদর্শক (এআইজি) মো. সোহেল রানা আজ বাসসকে জানান, রোবার পবিত্র শবে বরাত ও ইস্টার সানডে পালন উপলক্ষে নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ ছিল। রোববার শ্রীলঙ্কার বোমা হামলার ঘটনার পর নতুন করে আজ রোববার এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপাস্ট বসানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশের এসপি ও ডিসিদেরকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ যাতে নাশকতামূলক কর্মকান্ড না করতে পারে সেজন্য পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement