বেশ খারাপ সময় পার করছে বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল। ফিফা র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ২০০-এর কাছাকাছি। ১৯৪তে আছে তারা। একটি পক্ষ দেশের ফুটবল নিয়ে বাফুফের বর্তমান কমিটির ব্যাপক সমালোচনায় লিপ্ত। এর মধ্যেও দেশের ফুটবলের উন্নয়নে এগিয়ে আসছে নতুন নতুন কাব। এবার বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলতে আবেদন করা ছয় দলের দু’টিই নতুন। এর একটি ঢাকা সিটি এফসি লিমিটেড। আগামীকাল থেকে শুরু জাতীয় সামার মিটের স্পন্সর তারা। বাংলাদেশের ক্রীড়ার ইতিহাসে সম্ভবত এটাই প্রথম কোনো ফুটবল কাব ভিন্ন একটি ফেডারেশনের আসরের পৃষ্ঠপোষক। মূলত এর মাধ্যমেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অভিষেক তাদের।
অন্য কাব কিনে ফুটবলে দাপটের সাথে আছে বেশ কিছু কাব। কিন্তু সে ধারার বিপরীতে অবস্থান ঢাকা সিটি এফসির। তারা নিজেরাই তৃণমূল থেকে সব শুরু করতে চায়। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত কাব ম্যানচেস্টার সিটির অনুকরণেই এই কাবের নাম দেয়া হয়েছে ঢাকা সিটি এফসি। তাদের মূল লক্ষ্য প্রত্যেক উপজেলা থেকে ফুটবলার সংগ্রহ করা। এটা তাদের ১২ বছরব্যাপী টার্গেট। কাবের সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দোজা খান জানান, আমাদের মূল উদ্দেশ্যই অ্যাকাডেমি গড়া। এরপর ফুটবলার তৈরি করে দেশের জন্য ভূমিকা রাখা। উল্লেখ করেন, ‘আমাদের যদি বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলার অনুমতি না দেয়াও হয় তাহলে অন্য কাব কিনতে যাবো না। এটা আমাদের নীতি বিরুদ্ধ। প্রয়োজনে পাইওনিয়ার লিগে দল গড়ে তার পর উঠে আসব ওপরে।’ শীর্ষপর্যায়ে একটি কাব চালাতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সে অর্থের কী জোগানা হবে? শামসুজ্জোহার বক্তব্য, ইচ্ছে থাকলে টাকা কোনো সমস্যা নয়। বলেন, ‘আমাদের দেশে এত মানুষ। তাহলে আমরা কেন ফুটবলে এগোতে পারব না। ক্রোয়েশিয়া পারলে আমরা কেন পিছিয়ে থাকব।’
এই কাবের প্রধান উপদেষ্টা করা হয়েছে অ্যাথলেট কোচ কিতাব আলীকে। তার দেয়া তথ্যে, আমরা সারা দেশ থেকে ফুটবলার সংগ্রহ করব। ফুটবলারের পাশাপাশি অ্যাথলেট খোঁজার কাজও চলবে। যারা ফুটবলে টিকবে না তাদের অ্যাথলেটিকসে নেবো যোগ্যতা অনুযায়ী। দুই মাসের মধ্যেই তাদের ফুটবলার বাছাইয়ের কাজ শুরু হবে। সাড়ে সাত শ’ ফুটবলার বাছাই করার লক্ষ্য স্থির করেছে তারা। সেখান থেকে ৪০ জনকে দেয়া হবে দীর্ঘ মেয়াদে প্রশিক্ষণ।
আপাতত কাবটি চলছে ১১ সদস্যের কমিটি দিয়ে। তারাই কাবের প্রধান অর্থের জোগানদাতা। ফুটবলারদের দীর্ঘ মেয়াদে প্রশিক্ষণের জন্য ইউক্রেনের দুই কোচের সাথে তাদের কথাবার্তা চলছে। সাবেক এই সোভিয়েত সদস্যভুক্ত দেশটি থেকে সস্তায় কোচ পাওয়া যাবে। অ্যাকাডেমি এবং স্টেডিয়াম গড়ার জন্য ঢাকার বাইরে জমি খোঁজা হচ্ছে। ১০ একর জমির দলিলও তাদের হাতে।
ঢাকা সিটি এফসির ব্যাপারে ইতিবাচকই মনে হলো বাফুফে সেক্রেটারি আবু নাইম সোহাগকে। তার মতে, কাগজপত্র দেখে বেশ ভালোইতো মনে হলো ঢাকা সিটি এফসিকে। তারা ম্যানচেস্টার সিটির অনুকরণে ঢাকা সিটি ফুটবল কাব গড়তে চায়।