প্রমাণিত হলে ডিসি ডিসমিস: মন্ত্রিপরিষদ সচিব
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৬ আগস্ট ২০১৯, ১৮:৫৬
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছেন, জামালপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে সরকার গঠিত কমিটি কাজ শুরু করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে চাকরি থেকে ডিসমিস (চাকরীচ্যুত) করা হতে পারে। আবার পদাবনতিও হতে পারে। কোনও ধরনের ঢিলেমি হওয়ার সুযোগ নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরুদণ্ড হবে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠক নিয়ে ব্রিফ করার সময় সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত এক নারী অফিস সহকারীর সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের পর রোববার জামালপুরের ডিসি আহমেদ কবীরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটিকে আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা) মুশফিকুর রহমানকে কমিটির আহ্বায়ক এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধি, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের একজন প্রতিনিধি, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন প্রতিনিধিকে কমিটির সদস্য করা হয়। তবে এ তদন্ত কমিটির সদস্যরা কেউ উপসচিব পদমর্যাদার নিচে হতে পারবেন না।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন শৃঙ্খলা অধিশাখার উপসচিব সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আদেশে বলা হয়েছে, কমিটি প্রকাশিত ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এছাড়া কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিনে পরিদর্শন করবে এবং ভিডিওটি যাচাইয়ের বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেবে। তদন্ত কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট মতামত দিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত কমিটিকে যে টার্মস অব রেফারেন্স (টিওআর) দেওয়া হয়েছে, তাতে শুধু ভিডিও সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি সম্পত্তির অপব্যবহারসহ আরও যেসব অভিযোগ আছে সে ব্যাপারে কী হবে? একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, কমিটি যদি মনে করে অন্য কোনও প্রাসঙ্গিক বিষয়কে টেনে আনা প্রয়োজন অথবা এই বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে অন্য কোনও বিষয় এসে যায়, তাহলে সেগুলোও তারা তদন্ত করতে পারবে। প্রতিবেদনে তারা উল্লেখ করবেন যে উনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগও পাওয়া গেছে। আশা করছি- নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কমিটি প্রতিবেদন দেবে। আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সময়সাপেক্ষ বিষয়।
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। অতীতে সেভাবে কাউকে শাস্তি পেতেও দেখা যায়নি। জামালপুরের ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি, শাস্তি হবে ইনশাআল্লাহ। তবে এ বিষয়ে মন্ত্রিসভায় কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, যদি তদন্তে (অভিযোগ) প্রমাণিত না হয় তবে কাউকে শাস্তি দেয়া কঠিন। আমরা এজন্য কমিটি করেছি। কমিটি দেখবে এটা। অবজেক্টটিভলি দেখবে, নিরপেক্ষভাবে দেখবে। টেকনিক্যালি এটার মধ্যে যদি কোনো ম্যানুপুলেশন থাকে তারা সেটাও যাচাই করবে এক্সপার্ট দিয়ে। সেজন্য এক্সপার্টও সঙ্গে রাখা হয়েছে। যদি দোষী সাব্যস্ত হয় তবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কী ধরনের শাস্তি হতে পারে- জানতে চাইলে শফিউল আলম বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ডিসিপ্লিন অ্যান্ড আপিল রুল যেটা- সেখানে ডিসমিসাল হতে পারে চাকরি থেকে (চাকরিচ্যুতি) অথবা নিচের পদে নামিয়ে দেয়া হতে পারে। গুরু দণ্ড হতে পারে। তিনি বলেন, কার্যপরিধির বাইরেও যদি কোনো ইনফরমেশন চলে আসে তবে গঠিত তদন্ত কমিটি বলতে পারে তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগও আছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গঠিত কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে আহমেদ কবীরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে বলেও তিনি জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা